
ডেস্ক নিউজ | ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, চিন্ময় কৃষ্ণদাসের মুক্তি এবং সেনা মোতায়েনের দাবিতে নির্বাচন কমিশনে বিএমজেপি’র প্রস্তাবনা পেশ।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও সংখ্যালঘু-বান্ধব করার লক্ষ্যে বুধবার (১৯ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা পেশ করেছে বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি)। দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশন সচিবের কাছে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

বিএমজেপি’র পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নির্বাচনের আগে ও পরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে থাকে। এমতাবস্থায়, নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত ১১টি আলোচ্যসূচিকে স্বাগত জানিয়ে বিএমজেপি নিম্নোক্ত দাবিগুলো জোরালোভাবে উপস্থাপন করেছে:
১. কঠোর নিরাপত্তা ও সেনা মোতায়েন: নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সংখ্যালঘুদের ভয়ভীতি প্রদর্শন রোধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে। বিএমজেপি দাবি জানিয়েছে, ভোটগ্রহণের ৭ দিন পূর্ব থেকে নির্বাচনের ১০ দিন পর পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কোনো প্রার্থী সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা বা ভীতি প্রদর্শন করলে তাৎক্ষণিকভাবে তার প্রার্থিতা বাতিল করতে হবে।
২. শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারীর মুক্তি: বিএমজেপি তাদের বিশেষ প্রস্তাবে উল্লেখ করে যে, গত ৫ আগস্ট ২০২৪-পরবর্তী সময়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব রক্ষায় শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারী আশার আলো জাগিয়েছিলেন। তাকে মিথ্যা মামলায় বন্দি রাখা হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করতে এবং সংখ্যালঘুদের আস্থা অর্জনে অনতিবিলম্বে এই ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করা হয়েছে।
৩. গুজব প্রতিরোধ ও সাইবার সেল: নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এআই (AI) বা ডিপফেক ভিডিও ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর অপচেষ্টা রোধে ইসির অধীনে শক্তিশালী ‘সাইবার মনিটরিং সেল’ গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কোনো গুজব ছড়ালে ১ ঘন্টার মধ্যে তার সত্যতা যাচাই করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
৪. প্রবাসীদের ভোটাধিকার ও পোস্টাল ব্যালট: প্রবাসে অবস্থানরত বিপুল সংখ্যক সংখ্যালঘু এবং দেশের ভেতরে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা ভোটারদের জন্য ‘Out of Country Vote (OCV)’ এবং ‘In Country Postal Vote (ICPV)’ ব্যবস্থা চালুর জোর দাবি জানানো হয়।
৫. ধর্মীয় উপাসনালয়ের ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ: নির্বাচনী প্রচারণায় মসজিদ, মন্দির বা কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছে বিএমজেপি। প্রতিপক্ষকে ‘নাস্তিক’ বা ‘ কাফের ‘ ইত্যাদি -এর মতো বিদ্বেষমূলক আখ্যা দিলে প্রার্থিতা অযোগ্য ঘোষণার দাবিও জানানো হয়।
এছাড়াও, প্রতিটি জেলা-উপজেলায় সংখ্যালঘুদের জন্য বিশেষ ‘সুরক্ষা সেল’ ও হটলাইন চালু, ৩০০ আসনের ভোটার তালিকার ডাটাবেজ রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য উন্মুক্ত করা এবং ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টগুলোর সংস্কারের দাবি জানিয়েছে দলটি।
বিএমজেপি আশা প্রকাশ করে, একটি ভীতিমুক্ত ও সর্বজনগ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে নির্বাচন কমিশন এই প্রস্তাবনাগুলো সদয় বিবেচনা করবে।