আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভারতের লোকসঙ্গীত, শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও ভজনসঙ্গীতের জগতে যিনি ইতিমধ্যেই শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন, সেই মেধাবী শিল্পী মৈথিলী ঠাকুর এবার রাজনীতির মাঠেও এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। মাত্র ২৫ বছর বয়সে বিহারের আলীনগর আসন থেকে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি বিপুল ব্যবধানে বিজয় অর্জন করেছেন। তাঁর এই জয় শুধু একটি আসনের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়; বরং সাংস্কৃতিক শক্তির রাজনীতিতে উত্থানের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
মৈথিলী ঠাকুরের জনপ্রিয়তা তৈরি হয়েছিল সঙ্গীতের মাধ্যমে। তাঁর কণ্ঠের ভক্তিমাধুর্য, শাস্ত্রীয় তাল-লয়ের নিখুঁত প্রয়োগ এবং ভারতীয় লোকধারার গভীর অনুভব তাঁকে অল্প বয়সেই ভারতের ঘরে ঘরে পরিচিত করে তুলেছিল। তবে তিনি শুধু একজন শিল্পী নন—তিনি ছিলেন বরাবরই স্পষ্টবাদী এবং সনাতনী মূল্যবোধের এক সাহসী প্রতিনিধি। প্রায় পাঁচ বছর আগে, মাত্র উনিশ–বিশ বছর বয়সে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, বলিউডে হিন্দুধর্ম ও ভারতকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়; তাই প্রস্তাব যতই আসুক, তিনি কখনও বলিউডে গান গাইবেন না। এই সরল অথচ দৃঢ় অবস্থান তাঁকে ভক্তদের কাছে আরও গ্রহণযোগ্য করে তোলে এবং সেই সময় থেকেই তাঁর মধ্যে নেতৃত্বের ঝলক অনেকে দেখতে পান।
আলীনগরের ভোটাররা জানালেন, তাঁরা মৈথিলীকে শুধু একজন শিল্পী হিসেবেই নয়, বরং এক সৎ, পরিশ্রমী এবং মূল্যবোধে বিশ্বাসী তরুণ প্রজন্মের মুখ হিসেবে দেখেছেন। তাঁর প্রচারণায় ছিল না অতি-বড় কথা বা প্রচলিত রাজনৈতিক ভাষণ; বরং ছিল মানুষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা, তাদের প্রয়োজন ও সমস্যার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা এবং সংস্কৃতি ও উন্নয়নের সমন্বিত ভাবনা তুলে ধরা। এই সততা, স্নিগ্ধতা ও বাস্তবমুখী দৃষ্টিভঙ্গিই তাঁকে ভোটারদের বিপুল আস্থা এনে দিয়েছে।
মৈথিলীর এই বিজয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিহারজুড়ে যে ফল এসেছে, তাতে মোদি–নীতীশ জোটের ভূমিধস সাফল্য স্পষ্ট করে দিয়েছে যে রাজ্যের মানুষ আবারও উন্নয়ন, স্থিতিশীলতা ও সনাতনী আদর্শের পক্ষে তাদের সমর্থন জানাচ্ছেন। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, নতুন এই তরুণ নেতৃত্ব ভবিষ্যতে বিহারের রাজনীতিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। সামাজিক মাধ্যমেও বহু মানুষ মৈথিলীকে অভিনন্দন জানিয়ে লিখছেন—লোকসঙ্গীতের মঞ্চ জয় করার পর এবার তিনি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন; হয়তো আগামী দিনে তাঁকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেও দেখতে পাওয়া যেতে পারে।
যে বয়সে অনেকে এখনও নিজের জীবনের দিশা খুঁজে বেড়ায়, সেই বয়সে জনগণের এত বড় আস্থা অর্জন নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী অর্জন। মৈথিলী ঠাকুর আজ প্রমাণ করলেন—সংস্কৃতির শক্তি যখন নিষ্ঠা, মূল্যবোধ ও কর্মপ্রতিজ্ঞার সঙ্গে যুক্ত হয়, তখন তা জনগণের বিশ্বাস জয় করতেই পারে।
সূ ত্র: d e b a l o y m e d i a n e w s