1. live@shikhabd.info : শিখাবিডি : শিখাবিডি
  2. info@www.shikhabd.info : শিখাবিডি :
বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৪৭ অপরাহ্ন

শ্রমিকদের নায্য অধিকার আদায়ে কানাইঘাটে শ্রমিক-মালিক দ্বী-পক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত

প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৬ বার পড়া হয়েছে
শ্রমিকদের নায্য অধিকার আদায়ে কানাইঘাটে শ্রমিক-মালিক দ্বী-পক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত

লোভাছড়া পাথর কোয়ারীতে ইতিপূর্বে জব্দকৃত পাথর অপসারণ করলে পাথর অপসারণে কর্মরত শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিরাপদ কর্ম পরিবেশ ও শ্রমিকদের নায্য অধিকার সহ সমসাময়িক সমস্যা নিরসনে লোভাছড়া লোড আনলোড শ্রমিক-ইউনিয়ন রেজি নং সিলেট ৮০ কর্তৃক লোভাছড়া পাথর কোয়ারীতে পাথর অপসারণ কার্যক্রম চলমান অবস্থায় সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে একাধিকবার দরখাস্ত প্রদান করা হয়। কিন্তু উল্লেখিত সমস্যা নিরসণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন প্রতিকার না পাওয়ায় গত ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ইং তারিখে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে দরখাস্ত প্রদান করা হয়।

উক্ত দরখাস্তের প্রেক্ষিতে গত ৫ অক্টোবর (রবিবার) দুপুরে কানাইঘাটের মুলাগুল হারিছ চৌধুরী একাডেমী মিলনায়তনে শ্রমিক-মালিক দ্বী-পক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন এর যুগ্ম মহাপরিদর্শক (এডিজি) মাহফুজুর রহমান ভূইয়া, শ্রম পরিদর্শক সেফটি মো. আলমগীর হোসাইন ও সিলেট কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহা পরিদর্শক শীপন চৌধুরী, পরিদর্শক শাহ আলম, পরিদর্শক শহিদুল আলম, ব্যবসায়ীদের পক্ষে ছিলেন মুলাগুল আদর্শ পাথর ব্যবসায়ী সমিতির কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, শাহার আলম চৌধুরী, শাহাব উদ্দীন চৌধুরী, আভীর উদ্দীন প্রমুখ। শ্রমিকদের পক্ষে ছিলেন লোভাছড়া লোড-আনলোড শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি নং সিলেট ৮০ এর সভাপতি মো. আখতার হোসেইন, সহ-সভাপতি মো. মুহিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মমদ আলী, সহ সাধারণ সম্পাদক কামরুল আলম, অর্থ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কাওছার, প্রচার সম্পাদক ফারুক আহমদ, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক খলিলুর রহমান, সহ কার্যকরী কমিটি অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও শ্রমিক সদস্যবৃন্দ।

শ্রমিকদের নায্য অধিকার আদায়ে কানাইঘাটে শ্রমিক-মালিক দ্বী-পক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত

বৈঠকে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে লোভাছড়া লোড-আনলোড শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আখতার হোসেইন শ্রমিকদের নায্য অধিকার সহ দরখাস্তে উল্লেখিত প্রত্যেকটি বিষয় পুণরায় তুলে ধরেন এবং শ্রমিকদের পক্ষ থেকে ৭ দফা দাবীর যৌক্তিকতা তুলে বক্তব্য রাখেন। ব্যবসায়ীরা স্বীকার করেন যে, শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরির বিষয়ে শ্রমিক ইউনিয়ন বার বার দাবী করে আসলেও ব্যবসায়ীরা এ ব্যাপারে কোন গুরুত্ব দেননি।

শ্রমিকদের শ্রমের ন্যায্যতার জায়গা থেকে প্রতি ফুটে ১ ইঞ্চি করে কম দেওয়ার ব্যাপারে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথা চালু হয় যা এখনো পর্যন্ত চলমান আছে। তবে শ্রমিকরা এই পরিমাপের বিরোধীতা করলেও ব্যবসায়ীরা মেনে নেয়নি। ব্যবসায়ীরা মনে করেন প্রযুক্তির মাধ্যমে যদি পাথর অপসারণ বা স্থানান্তর করা হলে শ্রমিকদের যে মূল্য দিয়ে কাজ করানো হয় তা থেকে প্রতিফুটে ২টাকা কমে কাজ করা সম্ভব হয়। ব্যবসায়ীরা বলেন, শ্রমিকরা কাজ না করিলে ব্যবসায়ীরা প্রযুক্তির মাধ্যমে কাজ সেরে ফেলবেন। এতে শ্রমিকরা কোন কাজ না পেয়ে ভারী শিল্পের কাজও কম মূল্যে করতে হয় তাদের। তিনি বলেন, শ্রমিকদের প্রতি এমন বৈষম্য ও জুলুম দীর্ঘদিন থেকে ব্যবসায়ীরা করে আসছেন। এই বৈষম্যের অবস্থান ও ন্যায্য অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে শ্রমিক ইউনিয়ন রাজপথ ও সরকারের সহযোগীতার মাধ্যমে উত্তরণে প্রানান্তর প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে। শ্রমনীতে উঠে আসে ২০১৯ সালের শ্রম মূল্য প্রতি ফুটে ৫টাকা হারে ধার্য্য থাকায় বর্তমানে ও ঐ মূল্যে শ্রমিকদের মজুরী পরিশোধ করা হচ্ছে যা ব্যবসায়ীরা ও স্বীকার করেন।

বৈঠকে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন এর যুগ্ম মহাপরিদর্শক (এডিজি) মাহফুজুর রহমান ভূইয়া বলেন, ২০১৯ সালের ধার্য্যকৃত মজুরি ২০২৫ সালে প্রয়োগে ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত এবং তিনি ন্যায্য মজুরি নির্ধারণে শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে চালের উপর মূল্য ধার্য্য করে নুন্যতম মজুরী নির্ধারণের পরমর্শ দেন।

অপরদিকে প্রযুক্তি দ্বারা শ্রমিকদের শ্রম আত্মসাতের বিষয়টি সরেজমিনে তদন্তে প্রমানীত হয়, নদীর তীরে এখনো প্রায় ৫০/৫৫ টি ক্রাশার মেশিন ও ৪০টি ফ্যালুটার-এক্সেবেটার পাথর কোয়ারীর তীরবর্তী অবস্থান দৃশ্যমান হয়। সে দৃশ্যমান প্রযুক্তির ব্যবহারে একদিকে পরিবেশের ক্ষতি সাধিত হয় অপর দিকে শ্রমিকের কর্মসংস্থান হারিয়ে যায়। প্রযুক্তির ব্যবহারে সরকারের যদি অনুমতি থাকে তাহলে ব্যবহার করবেন, অন্যদিকে মানুষের কোন ক্ষতি সাধিত না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

তিনি বলেন, যেহেতু হাইর্কোটের রিটের আদেশের প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় থেকে পাথর অপসারণের পরবর্তী কোন আদেশ না থাকায় বর্তমানে কোয়ারিতে পাথর অপসারণ কাজ বন্ধ। ঐ এলাকায় প্রায় ৭/৮ হাজার শ্রমিক বেকারত্বের বোঝা বহন করছেন। অপরদিকে পাথর উত্তোলন প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় নদীর নাব্যতা ক্রমান্বয়ে সংকট হচ্ছে। বর্তমানে নদীর পুরো যৌবন থাকা সত্ত্বেও উজানে লোভা নদীর বাংলাদেশ সীমান্তে চর-জল জেগে উঠেছে যেখানে পাথরের স্তুপ বর্তমানে কোয়ারী এলাকার ৪/৫/৬ ফুট পানি নদীতে বিদ্যমান আছে। সীমান্তের এই দুর্গম জনপদের বাসিন্দাদের পাথরের কাজ ছাড়া বিকল্প কোন কর্মসংস্থান নেই। কর্মসংস্থান না থাকালে ঐ এলাকার জনসাধারণ জীবিকার তাগিতে চোরা-চালানের মতো জগন্য কাজে লিপ্ত হয়, যা আমাদের জন্য উদ্ভেগের বিষয়। বিগত ৭ মার্চ ২০২৫ ইং তারিখে শাহেদ আহমদ বি.এস.এফ হত্যার জলন্ত উদাহারণ। অতএব কোয়ারীকে সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ইজারা প্রদান করলে একদিকে রাষ্ট্র রাজস্ব পাবে অপরদিকে এই জনপদের অভাব ও অভিযোগ লাঘব হবে।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট