
নিজস্ব প্রতিবেদক :: পূণ্যভূমি সিলেটের প্রাণকেন্দ্র জিন্দাবাজার সিলেট প্লাজা মার্কেটের বিপরীতে অবস্হিত ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীনতম শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ জিউর আখড়ায় মন্দির দখল, তালা মারা এবং পূজা বন্ধ করে দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে বিএনপি ও স্থানীয় প্রভাবশালী একটি চক্রের বিরুদ্ধে। হামলার শিকার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, প্রশাসনিক তদন্তে জমি ও অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও সুদীপ রঞ্জন সেন বাপ্পুকে কীভাবে হিন্দু ধর্মকল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি করা হলো—তা নিয়ে গভীর প্রশ্ন রয়েছে।
মন্দিরের সেবায়েত জিতেন চন্দ্র নাথের ছেলে রাহুল দেবনাথ অভিযোগ করে বলেন, “সুদীপ সেন বাপ্পু সশস্ত্র লোকজন নিয়ে এসে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করে তারা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে।”
তিনি আরও জানান, এর আগে ৮ আগস্ট এজাজ উদ্দিন বাহিনী তালা দিলে সেনাবাহিনী এসে তা খুলে দেয়। কিন্তু সম্প্রতি আবারও মন্দিরে তালা ঝুলিয়ে পূজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রাহুলের দাবি— আওয়ামী লীগ নেতা নিতাই পালসহ একটি ভুয়া কমিটি শত শত কোটি টাকার জায়গা বিক্রি করেছে এবং অবৈধ ভবন নির্মাণ করেছে।
অভিযোগের বিষয়ে নিতাই চন্দ্র পাল জানান, তিনি শুধুমাত্র মন্দিরের জায়গার ভাড়াটিয়া, কোনো ভবন নির্মাণ করেননি।
অপরদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি নেতা সুদীপ রঞ্জন সেন বাপ্পু বলেন, “সব অভিযোগ মিথ্যা। আদালতের রায় অনুযায়ী আমরা সেখানে সাধারণ সভা করতে গিয়েছিলাম। বরং তারাই আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।” তিনি নিতাই পালের সঙ্গে তার সম্পর্ক অস্বীকার করে বলেন, “উনি আমার কাছে শুধু ভাড়াটিয়া।”
সিলেট – ৪ আসনে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী, সাবেক সিলেট সিটি মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি সাড়া দেননি।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইরশাদুল হক বলেন, “রাধা গোবিন্দ জিউর আখড়ার সম্পত্তি দেবোত্তর সম্পত্তি। এগুলো বিক্রয়ের এখতিয়ার কারও নেই। উপাসনালয়ে তালা দেওয়াকে সাম্প্রদায়িক উস্কানি হিসেবে দেখা যায়।”
এসএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, মন্দিরে তালা মারার বিষয়টি পুলিশের জানা নেই, তবে দুই পক্ষের মামলা তদন্তাধীন।
এদিকে সাধারণ ভক্তরা তালা অবিলম্বে খুলে পূজা চালুর দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি ঘটনাটিতে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, এবং প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র ও ধর্ম উপদেষ্টার জরুরি হস্তক্ষেপও কামনা করেছেন। এই মন্দিরে সিলেটের প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় প্রতিনিয়ত চলে দখল বাণিজ্য। সরকারের পট পরিবর্তনের পরই মন্দিরটি চলে যায় ক্ষমতাসীন দলের কাছে। বিগত দিনে এই মন্দির কমিটি নিয়ে কোর্টের ওয়ারেন্ট আদেশ হওয়ার পর একে একে তারা জামিন নেন বলেও জানা গেছে।
সূ ত্র: Shanatan barta news #SBNNews #সনাতন বার্তা নিউজ #Sylhet Mandir Issue #সনাতন বার্তা নিউজ- SBN