স্টাফ রিপোর্টার: সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন কর্তৃক অশোভন আচরণের শিকার হয়েছেন দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সিলেট ব্যুরো অফিসের স্টাফ রিপোর্টার আব্দুল আহাদ।
গতকাল রোববার দুপুরে তার কার্যালয়ে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আব্দুল আহাদ সিসিক কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিষয়ে সংবাদের বক্তব্য আনতে গেলে তিনি তার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এসময় তিনি তাকে ‘ভূয়া সাংবাদিক’ আখ্যা দিয়ে একপর্যায়ে তার অফিস কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। তিনি সাংবাদিক আব্দুল আহাদকে ‘পাগল’, ‘আবুল-তাবুল লোক’ বলে গালাগলি করে অপমানও করেন। সে সময় সিসিক কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ রুমে উপস্থিত ছিলেন। দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আব্দ্লু আহাদ সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক।
সম্প্রতি দৈনিক রূপালী বাংলাদেশে সিসিকের একাধিক কর্মকর্তার অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে অনুসন্ধানী সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এ জন্য কর্মকর্তারা দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ ছিলেন। আব্দুল আহাদকে পেয়ে সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন বলে দাবি সাংবাদিক আব্দুল আহাদের।
জানা যায়, ২০২৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ-এ সিসিকের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হানিফুর রহমানের দুর্নীতির বিষয়ক একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর সাংবাদিক আব্দুল আহাদ প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না বা কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে কি না এ বিষয়ে জানতে চান।
এ সময় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাংবাদিককে বলেন, ‘পত্রিকায় নিউজ হলেই কি ব্যবস্থা নিতে হবে? এরকম কোনো কিছু নেই। লিখিত অভিযোগ দেন।” সাংবাদিক জানান, সংবাদ প্রমাণ-ভিত্তিক হওয়ায় লিখিত অভিযোগের প্রয়োজন নেই।
সাংবাদিক আব্দুল আহাদ বলেন, সাংবাদিকের প্রতিক্রিয়ার পর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্রমশ ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে তার কার্যালয় থেকে বের হওয়ার নির্দেশ দেন এবং এ বিষয়ে কোনো কথা বলবেন না বলে জানান। পরে সাংবাদিক কার্যালয় ত্যাগ করার সময়ও তিনি আপত্তিকর ও অসম্মানজনক ভাষায় তাকে সম্বোধন করেন।
পরে সন্ধ্যায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দকে টেলিফোন করে সিসিক কর্তৃপক্ষ সাংবাদিক আব্দুল আহাদকে বিষয়টি ‘মিউচুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং’-এর মাধ্যমে মিমাংসা করার পরামর্শ দেন। অন্যথায় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাংবাদিকের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করতে পারেন বলে হুমকি দেওয়ার কথাও বলেন তারা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিসিকের সিইও মোহাম্মদ রেজাই রাফিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন। বলেন, সাংবাদিকতার এথিকস বাদ দিয়ে আব্দুল আহাদ তার কাছে তথ্য জানতে চেয়েছিলেন। পুরনো ঘটনায় আমাদের ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ নেই। তা নিয়ে বলারও কিছু নেই। তিনি বরং আমাকে অসম্মান করেছেন।
এদিকে রাতে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের ব্যুরো প্রধান, সিনিয়র সাংবাদিক সালমান ফরিদের মোবাইল ফোন নাম্বারে ক্ষুদে বার্তা পাঠান, ‘পুরো বিষয়টি আমাকে তথ্যমন্ত্রণালয়ে লিখিত ভাবে জানাতে হবে। আপনি কাইন্ডলি আপনার কলিগের ডিটেইল এবং আপনাদের দৈনিকের ওয়েব লিংকটা দিতে পারেন।’
সাংবাদিক সমাজের মধ্যে এ ঘটনায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। সচেতন মহল মনে করছে, একজন দায়িত্বশীল প্রশাসনিক কর্মকর্তার কাছ থেকে এমন আচরণ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও পেশাগত মর্যাদার জন্য উদ্বেগজনক।