1. live@shikhabd.info : শিখাবিডি : শিখাবিডি
  2. info@www.shikhabd.info : শিখাবিডি :
বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:২১ পূর্বাহ্ন

রাজশাহীতে কাটিমন আম চাষে ঘুরে দাড়াচ্ছে স্থানীয় অর্থনীতি

প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: বুধবার, ১২ জুন, ২০২৪
  • ২১৯ বার পড়া হয়েছে

রাজশাহীসহ বৃহত্তর বরেন্দ্র এলাকায় কয়েক বছর ধরে অসময়ের আম কাটিমন চাষ স্থানীয় অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত সৃষ্টি হয়েছে। এই আম চাষ করে অনেকেই ভাগ্য বদলাতে শুরু করেছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত দেশি জাতের তুলনায় কাটিমন তুলনামূলকভাবে নতুন ও ভিন্ন প্রজাতির। এর ব্যাপক বাণিজ্যিক সম্ভাবনা এখনো পরীক্ষাধীন থাকলেও কৃষকদের কাছে এটি উচ্চমূল্য, সারা বছর ফলন ও নতুন সম্ভাবনার কারণে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে।

রাজশাহীতে কাটিমন চাষ নতুন হলেও দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। থাই জাতের এই আম এক বছরে তিন থেকে চারবার ফলন দিতে পারে। ফলে কৃষকদের জন্য সারাবছর আয়ের সুযোগ তৈরি করছে।

প্রচলিত জাতের আম বছরে একবার, সাধারণত মে থেকে আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত বাজারে আসে। কিন্তু কাটিমন গাছে ফুল ও ফল একসঙ্গে ধরায় এটি বছরে একাধিকবার ফলন দেয়। ফলে কৃষকরা তিন-চার মাসের সীমাবদ্ধ মৌসুমের বাইরে নিয়মিত আয়ের সুযোগ পাচ্ছেন।

কাটিমন চারা উৎপাদন ও বিক্রির চাহিদা বাড়ায় নার্সারিগুলোর জন্যও নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। ফলে স্থানীয় অর্থনীতি আরো চাঙা হচ্ছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বাবুনগর গ্রামের আমচাষিরা জানান গত চার-পাঁচ বছর ধরে এই জাতের আম চাষ করছেন এবং ইতোমধ্যেই এ ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে।

এই একই জাতের আম দিয়ে অনেকের দুটি করে বাগান রয়েছে-একটি রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুণ্ডুমালা এলাকায়, অন্যটি গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাটে। এ দুুটি বাগানে ছয় হাজারেরও বেশি কাটিমন গাছ রয়েছে।

আমরা এবার প্রায় ১ হাজার ৩০০ মণ আম উৎপাদন করতে পারবো বলে আশা করছি। বর্তমানে এই আম প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

প্রথম দিকের সাফল্য এবং সারা বছর আম উৎপাদনের সম্ভাবনা স্থানীয় কৃষকদের কাছে কাটিমনকে ক্রমশ জনপ্রিয় করে তুলছে।

অনেক কৃষকই এখন সক্রিয়ভাবে এ জাতের আম রোপণ করছেন। কেউ কেউ দিনাজপুর থেকে চারা এনে পুকুর পাড়সহ অব্যাবহৃত জমিতে বাগান করছেন।

রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার গক কৃষক আমাদেরকে জানান প্রচলিত ধারা ভেঙে বছরজুড়ে ফল দেওয়া এ জাতের আম চাষ করছেন। তিনি আগস্টের শেষদিকে আম তোলেন, যখন মৌসুমি আম শেষ হয়ে যায়। ফলে বাজারে কোনো প্রতিযোগিতা থাকে না।

তারা বলেন, আমরা শুধু অফ-সিজনে আম তুলি। তখন বাজারে প্রতিযোগী না থাকায় দামে তিনগুণ বেশি লাভ পাই।

মাদের দেখে নিজ গ্রামে কাটিমন আমের বাগান করেছেন অনেকেই, যা দেখে অনেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে আম চাষে নেমেছেন। এতে গ্রামের অর্থনীতিতে নতুন গতি এসেছে।

পুঠিয়া উপজেলার কনাইপাড়া গ্রামের এক বাগান মালিক বলেন, প্রায় প্রতি বছরই এখানে নতুন নতুন জাতের আম চাষ হচ্ছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ভালো জাতগুলো ছড়িয়ে পড়ছে।

চাহিদা বাড়ায় অনেক কৃষক বাগানের পাশাপাশি নার্সারিও গড়ে তুলেছেন। কাটিমন আমের আরেকটি সুবিধা হলো এটি অন্যান্য জাতের চেয়ে বেশিদিন সংরক্ষণ করা যায়।

তবে সারা বছর পরিচর্যা খরচ কৃষকদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

রাজশাহীর আঞ্চলিক ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, বিদেশি জাতের গাছে ফুল ও ফল একসঙ্গে ধরে। ফলে বছরে তিন থেকে চারবার ফলন দেয়, যেখানে প্রচলিত জাত বছরে একবার ফলন দেয়।

তিনি জানান, থাইল্যান্ড থেকে আনা এই জাতের রোগবালাই প্রতিরোধ ক্ষমতা ও অঞ্চলের উপযোগিতা নিয়ে গবেষণা চলছে। একই সাথে বাগান করতে আগ্রহী অনেকেই নিজ উদ্যােগে বাগান তৈরি করে কৃষি উদ্যাক্তা হচ্ছেন।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট