
সুনির্মল সেন :: সিলেট মহানগরীতে হকাররা যেনো দিনের পর দিন বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। এদের কোনো কাণ্ডজ্ঞান নাই বললেই চলে! কোনোভাবেই যেনো তাদের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না।
প্রতিদিন দুপুর থেকে ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে হকাররা বসলেও এখন সন্ধ্যা থেকেই ফুটপাত ও রাস্তা একরকম তাদের দখলে চলে যায়। এর ফলে প্রায় প্রতিদিনই নগরীর রাস্তা-ঘাটে তৈরি হচ্ছে যানজট, নোংরা হচ্ছে পরিবেশ -প্রতিবেশ। লক্ষ্য করলে দেখা যায়, বিশেষ করে সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থা বন্দরবাজার এবং কোর্ট পয়েন্ট এলাকার।
সরেজমিন নগরীর বন্দরবাজার ও কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় দেখা যায়, নগর ভবনের একেবারে সম্মুখপান থেকে লালদীঘির পাড় পয়েন্ট পর্যন্ত ফুটপাত ও যান চলাচলের রাস্তার প্রায় অর্ধেকের বেশি অবৈধ হকারদের দখলে চলে যায়। চশমা, তালা-চাবি ওয়ালা হকাররা বসেছেন ফুটপাতে আর তরি-তরকারি, শাক-সব্জি, শুটকি, মশলাপাতি নিয়ে ঝাপিতে করে হকাররা বসেছেন এর সাথের রাস্তায়। রাস্তার বাকি অংশে অবস্থান নিয়েছেন ভ্যান নিয়ে হকাররা। সব মিলিয়ে যানবাহন চলাচল তো দূরে থাক, নির্বিঘ্নে কোনো মানুষ হাঁটারও অবকাশ আছে বলে মিলছে না এই সড়কে।
অপরদিকে, নগরীর কোর্ট পয়েন্ট থেকে মধুবন পর্যন্ত রাস্তার দক্ষিণ দিক প্রায় পুরোটাই হকাররা দখল করে নিয়েছেন। উত্তর দিকে কোর্ট পয়েন্ট থেকে সোনালী ব্যাংক পর্যন্ত অনেকটা স্থায়ী স্থাপনার মতো ত্রিপল-টেবিল নিয়ে বসে আছেন হকাররা। মনে হয় যেনো তাদের বাপ-দাদার রেখে যাওয়া সম্পত্তি। উত্তরাধিকারি হিসেবে তারা এখানে বসে আছেন। এসব দোকানে তারা শার্ট -প্যান্ট, টি-শার্ট, বাচ্চাদের পোশাক এবং জুতা বিক্রয় করছেন।
সোনালী ব্যাংক থেকে জিন্দাবাজার হয়ে আম্বরখানা পর্যন্ত ভ্যান, ঠেলাগাড়ি, ঝাপি প্রভৃতি নিয়ে যার যে-রকম সুবিধা পণ্য সামগ্রি নিয়ে বসেন তারা। এতে মধ্যরাত থাকে সকাল পর্যন্ত এই কয়েক ঘন্টা ছাড়া দিনের অন্যান্য সময় এই এলাকায় যানজট লেগেই থাকে। এতে একদিকে যেমন যান-চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে, অপরদিকে চলাচলে পথচারীদেরও নানান দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মাঝে-মধ্যে সিলেট সিটি কর্পোরেশন(-সিসিক) কিংবা স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চললেও তা দায়সারা উচ্ছেদ বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগীরা বলেন, হকাররা কেনো দিনের পর দিন, মাসের পর মাস অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে তা যাচাই করা দরকার। পূর্ব থেকে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা না করলে অভিযান কেবল দায়সারা হয়ে থাকবে। এতে কোনো ফল আসবে না। তবে ফলাফল না আসার কারণ, পুলিশ ও সিসিক এর লাইনম্যানের চাঁদাবাজির কারণে হকারদের বেপরোয়া দৌরাত্ম্য বন্ধ করা যাচ্ছেনা। চাঁদাবাজি বন্ধ না করার কারণে হকাররা তাদের ব্যবসা দিনের পর দিন বাড়িয়ে চলছে। সিলেট মহানগরীতে পুরোদমে হকার উচ্ছেদ না হওয়ায় নগরীর অনেকেই জানতে চাচ্ছেন কবে হকারদের দৌরাত্ম্য শেষ হবে? সিলেটে বসবাসরত সকল হকাররা বহিরাগত। সংবাদের ছবিগুলো আজ ১৩ নভেম্বর ২০২৫ ইং তারিখে সিলেট মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে রাতের দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করা হয়েছে।
বিগত দিনে সিলেট কল্যাণ সংস্হার কতৃক সিলেট সিটি কর্পোরেশন গেইট সম্মুখে হকার উচ্ছেদের অভিযান চালানোর জন্য ধারাবাহিক আন্দোলনে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকতা রেজাই রাফিন সরকার বলেন তিনির অফিস সম্মুখ এবং শহরের রাস্তায় হকার আছে বলে উনার জানা নাই ও আন্দোলনের বিষয়ে কিছু জানেননা। এর কিছুদিন পর সাবেক সিটি মেয়র ও জেলা প্রশাসকের সাথে লালদিঘীর পার অস্হায়ী হকার পূনর্বাসনের স্হান পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকে দেয়া এক স্বাক্ষাৎকারে তিনি বলেন মানুষের যাতায়াত যেখানে থাকবে সেখানে হকারও থাকবে? এমন বক্তব্যে সচেতন নগরবাসী স্তব্ধ ও বাকরুদ্ধ!